× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

পৃথিবীর প্রথম পিরামিড

২১ মে ২০২২, ০২:০০ এএম

পিরামিড

পিরামিড নিয়ে সারা পৃথিবীর মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। মিশর, দক্ষিন আমেরিকা, চীনসহ বিশ্বের অনেক প্রাচীন সভ্যতার দেশগুলোতেই পিরামিডের খোঁজ পাওয়া গেছে। সেই পিরামিডগুলো থেকে এমন সব গুপ্ত ও দামী বস্তুর সন্ধান মিলেছে যা প্রত্নতাত্ত্বিকদের চোখ কপালে তুলেছে। এই পিরামিডগুলো কেনই বা নির্মাণ করা হল কিংবা পৃথিবীতে কে প্রথম এর নির্মাণকাজ শুরু  করল তা-নিয়ে কিছুটা মতভেদ লক্ষ্য করা যায়।  

 তবে ধারণা করা হয়, আজ থেকে প্রায় ৪,৭০০ বছর পূর্বে প্রথম পিরামিডের নকশা করেন প্রাচীন মিশরের স্থাপত্য প্রকৌশলী ইমহোতেপ। তিনি মিশরের ফারাওদের চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়াও তিনি সূর্য দেবতা 'রা' এর মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ছিলেন। তাকে প্রাচীন পৃথিবীর অন্যতম সেরা স্থপতি, প্রকৌশলী ও চিকিৎসক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

দেশটির তৎকালীন ফারাও জোসেরের আমলে ফারাওদের মূল সমাধিমন্দির ছিল আবিদোস নামক স্থানে। কারণ, সেসময়কার মিশরীয়দের বিশ্বাস ছিল, আবিদোসে শায়িত আছেন দেবতা ওসাইরিস। কিন্তু প্রথম রাজবংশের রাজাদের সমাধি দাফনের ফলে আবিদোসে তেমন খালি জায়গা অবশিষ্ট ছিল না। তাই, দ্বিতীয় রাজবংশের অনেকে ফারাওই সাক্কারায় নিজ সমাধি নির্মাণ করেন। এছাড়াও, সাক্কারা রাজধানী মেম্ফিসের খুব নিকটে অবস্থিত হওয়ায় ফারাও জোসের সাক্কারাকেই নিজ সমাধিস্থান হিসেবে নির্ধারণ করলেন। সম্পূর্ণ পিরামিড পাথর দ্বারা তৈরি হবে বলে এতে প্রয়োজন ছিল দক্ষ শ্রমিকশ্রেণীর। কিন্তু যেসকল শ্রমিক জোসেরের স্টেপ-পিরামিড নির্মাণের সাথে যুক্ত ছিল, তাদেরকে দাস বলা যাবে না। কারণ, মিশরে তখনও দাসপ্রথা শুরু হয়নি।

স্টেপ-পিরামিডকে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রমের মাধ্যমে পরিপূর্ণতা পেতে হয়েছিল। প্রথমদিকে, ইমহোতেপ একটি সাধারণ মাস্তাবা (মাটির ইট বা পাথর দিয়ে তৈরি আয়তক্ষেত্রাকার, ঢালু দেয়াল এবং সমতল ছাদবিশিষ্ট প্রাচীন মিশরীয় সমাধি) নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। তখন অধিকাংশ মাস্তাবার উচ্চতা ৩০-৪০ ফুট হতো। কিন্তু ইমহোতেপ ভাবলেন, উচ্চতা আরও বাড়ানো দরকার। তিনি চেয়েছিলেন মিশরের প্রথম পাথরের স্থাপত্যকে ধর্মীয় ধারণার সাথে জুড়ে দিতে। প্রথমদিকের মাস্তাবাসমূহে শিলালিপি ও নলখাগড়া খোদাই করে দেওয়া হতো। ইমহোতেপও এর ব্যতিক্রম কিছু চিন্তা করলেন না। তবে তার ইচ্ছা ছিল, এই শিল্পবিদ্যা ও কারুকার্যগুলো হোক সূক্ষ্ম, স্পষ্ট।

পুরো পিরামিড কমপ্লেক্স যে উঁচু প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত ছিল, তার উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। এটি নির্মাণ করা হয়েছিল প্রারম্ভিক রাজবংশ আমলের ফ্যাসাডের অনুকরণে। প্রাচীরে মোট দরজার সংখ্যা ছিল ১৪টি, যার মধ্যে ফলস ডোর ছিল ১টি। জীবিতদের জন্য একটি প্রবেশপথ বরাদ্দ ছিল। সেটি নির্মাণ করা হয়েছিল প্রারম্ভিক রাজবংশের সময়কালের সাথে মিল রেখেই, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে। ফলস ডোরগুলো বানানো হয়েছিল ফারাওয়ের আত্মা 'কা' এর জন্য।

দক্ষিণ চত্বরের একেবারে দক্ষিণে দক্ষিণ মন্দির ও সমাধি অবস্থিত। অভ্যন্তরীণ কাঠামোর কথা বিবেচনা করলে দক্ষিণ সমাধি পুরোটাই স্টেপ-পিরামিডের ছাঁচে তৈরি। পঞ্চম রাজবংশের সময় ফারাওরা সূর্যের মাধ্যমে পুনর্জন্মে বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। পঞ্চম রাজবংশের সময় পূর্ব দিকে মুখ করে মন্দির নির্মাণ করা হতো। 

পিরামিড কমপ্লেক্সের পশ্চিমের পুরোটা জুড়ে মনোমুগ্ধকর তিনটি ঢিবি অবস্থিত। আকারে ছোট এই ঢিবিগুলোকে দেখলে মনে হয়, এগুলো যেন পিরামিডের দিকে নাথা নুইয়ে আছে। তবে এর অধিকাংশ জায়গাতেই এখনো অনুসন্ধান চালানো হয়নি। 

স্টেপ-পিরামিড এবং এর কমপ্লেক্সের চমৎকার নির্মাণশৈলী খুবই আকৃষ্ট ও সন্তুষ্ট করেছিল ফারাও জোসেরকে। তিনি এই পিরামিড নিয়ে খুবই গর্বিত ছিলেন। সেজন্য এর স্থপতি ইমহোতেপকেও তিনি দিয়েছিলেন অনন্য সম্মান। পূর্বের সকল প্রথা ভেঙে জোসের তার নিজের একটি স্তম্ভে ইমহোতেপের নামও খোদাই করে দিয়েছিলেন। প্রাচীন পৃথিবীতে তৈরি হওয়া স্টেপ-পিরামিড আজও স্থাপত্যবিদদের কাছে এক রহস্যের নাম, যা অনুসরণ করে পরবর্তীকালে মিশরীয় স্থপতিরা বহু স্থাপত্য নির্মাণ করেন।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.