× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

তাপদাহে হিটশকের ঝঁকিতে বোরো

মো. ইমরুল হাসান চৌহালী, সিরাজগঞ্জ

২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৫৮ পিএম

সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে আবহাওয়া পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে কৃষি খাতে।

এ বছর চৈত্রের মাঝামাঝি থেকে দেশে তাপদাহ শুরু হয়েছে। এতে দেশের প্রধান ফসল বোরো ধান হিট ইনজুরি বা হিটশকের ঝুঁকিতে রয়েছে। 

চৌহালী উপজেলার কৃষকদের চোখে-মুখে বোরো'র হিটশকের আতঙ্কের ভাঁজ।

এবার চৌহালী উপজেলায় ৩৬০০হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। 

বোরা চাষী মোহাম্মদ আলী বলেন, একদিক ঘনঘন লোডশেডিং সেচ চালাতে পারছি না অন্যদিকে প্রচন্ড দাবদাহে বোরোর  হিটশকের আশঙ্কায়  আমরা চিন্তিত। 

এতে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে হিটশকে বোরো ধান পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। আবার অনেক যায়গায় সাত-দশদিনের মধ্যেই কাটতে হবে। 

এমন অবস্থা যদি আরও কিছুদিন থাকে বেশকিছু যায়গায়   বোরো ধানের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

মাত্রাতিরিক্ত গরমে মানুষ যেমন হিটস্ট্রোক করে তেমনি তীব্র তাপদাহে ধানগাছও পুড়ে যায়, মরে যায়। যাকে বলা হয় হিটশক বা হিট ইনজুরি। হিটশক হলে ধানের ফুল পুড়ে দানা চিটা হয়ে যায়। মূলত ধানের ফুল ফোটার সময়ই এ ধরনের ক্ষতি হয়। 

৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে হিটশকের মাত্রা ধরা হয়। বর্তমানে চৌহালীতে  ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রা বিরাজ করছে।

বোরো মৌসুম শুরু হয় শীতে নভেম্বরের শেষে অর্থাৎ কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে।

আর শেষটা হয় চরম গরমের এপ্রিল-মে মাসে, অর্থাৎ বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে। ধানের জন্য ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রা অসহনীয়। ফুল ফোটার সময় এক-দুই ঘণ্টা এ তাপমাত্রা বিরাজ করলে মাত্রাতিরিক্ত চিটা হয়ে যায়।

তাপপ্রবাহের মধ্যে কালবৈশাখীও থাকে। কিন্তু যখনই তাপপ্রবাহ হয় এবং সে সময় বৃষ্টি থাকে না, তখনই ধানের জন্য তা হিটশক ঘটে। অর্থাৎ, বৃষ্টিহীন তাপপ্রবাহের সময় ধানের ফুল এলে তা শুকিয়ে যায়। যে অবস্থা এখন বিরাজ করছে।

তীব্র গরমের কারণে এবার হিটশক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।  হিটশক ফ্লাওয়ারিং স্টেজে (ফুল ফোটা পর্যায়ে) হয়।

অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া অথবা তাপমাত্রা কমে যাওয়া এ দুই কারণে হিটশক বা হিট ইনজুরি হয়।

৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে হিটশকের মাত্রা ধরা হয়। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। কোথাও কোথাও ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রী পর্যন্ত তাপমাত্র বিরাজ করছে। 

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, বড় হিটশক ২০২১ সালে প্রথম হয়। এতে কমপক্ষে ৫০ হাজার হেক্টর জমি হিটশকে আক্রান্ত হয়েছিল।

এই সময়ে কৃষি ও মাঠ ফসলের সুরক্ষায় বেশ কিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে  উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ  অধিদপ্তর।

চৌহালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  মো. মাজেদুর রহমান বলেন, চৌহালীতে এখন  যে পরিমান দাবদাহে বোরো যেমন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই!  কারণ বোরো ধান মিল্ক স্ট্যাজ থেকে শক্ত হয়েছে। এখন ২-৩ ইঞ্চি পানি জমি রাখতে হবে, তাহলে আর কোন সমস্যা হবে না। 

অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. সাব্বির আহম্মেদ (সিফাত)বলেন, এখন  ব্লাস্ট  ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ এর রোগ  বেশি হয়। 

তবে ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ দাবদাহে নাটিপ্রো টুপার অথবা ফিলিয়া সাত থেকে দশদিন পরপর বিকাল বেলা  দুই-তিনবার   জমিতে দিলে ব্লাস্ট রোগ কমে যায়। 

তাছাড়া  আমরা প্রত্যেক মঙ্গলবার কৃষকদের দাবদাহে সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছি যাতে কৃষকরা তাদের ফসল ভালোভাবে গোলায় তুলতে পারে।  

তিনি আরো বলেন  বিশেষ করে এখন ধান ফ্লাওয়ারিং স্টেজ থেকে  পার হয়েছে , সেখানে হিটশকের আশঙ্কা বেশি নয় । তবে  তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য বোরো ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ধানের শীষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই দুই থেকে তিন ইঞ্চি পানি রাখার পরামর্শ দেন। 

তাছাড়াও আরো অনেক ফসল আছে, যেমন আম, লিচু গাছের মুকুলের উপর পানির ছিঁট দিতে পরামর্শ দেন তিনি। যাতে করে আম ও লিচু খোটা শক্ত থাকে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.