গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সড়ক-মহাসড়ক ও ফুটপাট দখল করে অবৈধভাবে বসছে দোকানপাট, হাটবাজার ও বিভিন্ন যানবাহনের ষ্টেশন। এসব দোকানপাট, হাটবাজার ও যানবাহন ষ্টেশন বসিয়ে জমজমাট বাণিজ্য করা হচ্ছে। এ জমজমাট বাণিজ্যে পুলিশ, ইজারাদার ও নেতাকর্মীরাও জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে যান চলাচলসহ চরম জনদুর্ভোগ হলেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুর্ভোগে পড়া লোকজন।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর দিয়ে বয়ে গেছে। যেটাকে উত্তরবঙ্গের গেইটওয়েও বলা হয়। কিন্তু মহাসড়ক ও ফুটপাত দখল করে কালিয়াকৈর বাজার এলাকা, বাজার সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গড়ে উছেছে অবৈধ দোকানপাট, বাজার ও বিভিন্ন যানবাহনের ষ্টেশন বসছে। গত ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে উপজেলা প্রশাসন সেখানে উচ্ছেদ করলেও ২/৩ দিনের মাথায় অজ্ঞাত কারণে আবার বসছে এসব দোকানপাট, বাজার ও বিভিন্ন যানবাহনের ষ্টেশন। শুধু ওই বাজার এলাকাই নয়, কালিয়াকৈর পৌরসভার চন্দ্রা, পল্লীবিদ্যুৎ, সফিপুর ও উপজেলার বাইপাস, মৌচাক এলাকায় এ মহাসড়ক ও ফুটপাত এবং চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের বাড়ইপাড়া এলাকায় অবৈধভাবে হাটবাজার, দোকানপাট ও অবৈধ সিএসজি-অটোরিকশা ষ্টেশন বসানো হয়েছে।

এ মহাসড়কের সার্ভিস রোড বন্ধ করে বিভিন্ন স্থানে রাখা হচ্ছে বাস, ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, সিএনজি, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন। এছাড়া সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ এ মহাসড়কের চন্দ্রা, খাড়াজোড়া, সফিপুর ফ্লাইওভারের নীচে মহাসড়কের ওপর প্রতিদিন এসব অবৈধভাবে দোকানপাট, হাটবাজার ও বিভিন্ন যানবাহনের ষ্টেশন বসছে। আর সুযোগ বুঝে এসব দোকানপাট, দোকানপাট, হাটবাজার ও বিভিন্ন যানবাহনের ষ্টেশন থেকে প্রকাশ্যে একটি চক্র জমজমাট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের চাঁহিদা মতো চাঁদা না দিলে সেগুলো উচ্ছেদের হুমকিও দেয় ওই চক্রটি।

এ জমজমাট বাণিজ্যে অসাধু পুলিশ, ইজারাদার ও সরকার দলীয় কিছু নেতাকর্মীরাও জড়িত বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সড়ক-মহাসড়ক ও ফুটপাত দখলের কারণে যান চলাচলসহ যাত্রী ও পথচারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অথচ রাস্তার ওপড় এবং ফুটপাত দখল করে দোকান-বাজার বসানো আইনগত নিষেধ থাকলেও যেন প্রশাসনের কোন নজরদারী নেই। অতিদ্রুত এসব এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ লাঘবের দাবী স্থানীয়দের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানি ও বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা জানান, আকারে ছোট-বড় ব্যবসার ধরণ বুঝে প্রতি দোকান থেকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ২০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। একদিন টাকা না দিলে পরের দিন আর ওই দোকান বসতে দেয় না ওই চাঁদা আদায়কারীরা। টাকা দিতে দেরি হলে তারা নানা ধরণের হুমকি-দামকিও দেয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে যানবাহনের ষ্টেশন থেকেও টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর এ টাকার ভাগ পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরে যায় বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সালনা (কোনাবাড়ি) হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন জানান, আমি এখানে যোগদানের পর থেকেই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। তবে অচিরেই মহাসড়ক দখল মুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি। কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, এর আগেও কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কিন্তু দুএকদিন পর আবারও আগের মতোই দখল হচ্ছে। এবার যারা এসব বসাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে স্থায়ীভাবে সমাধানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও আরো যেখানে যেখানে এরকম অবস্থা আছে, সেগুলোও উচ্ছেদ করা হবে। তবে আমাদের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।